বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন
ইন্দুরকানী বার্তা:
বৃদ্ধা রাবেয়ার বাড়ি ফিরা কি শুধুই স্বপ্ন হয়ে থাকবে, নাকি খুঁজে পাবে তার আপন ভূবন। নাকি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এভাবেই খোলা আকাশের নিচে একটি বাগানে কুড়ে ঘরে জীবনের শেষ সময়টা কাটাবেন। আমি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার বোথলা গ্রামে আশ্রিত ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা রাবেয়া বেগমের কথা বলছি।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০ বছর পূর্বে ২০১২ সালের মার্চ মাসের দিকে রাবেয়া বেগম উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়নের বোথলা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. হেদায়েতুল ইসলাম আকন (হিদু আকন) এর দোকানের সামনে এসে অবস্থান নেয়। কাহিল অবস্থা দেখে হিদু আকন বাড়ি থেকে খাবার এনে দেয় রাবেয়া বেগমকে । সেই থেকে রাবেয়া হিদু আকনের কাছ থেকে অন্য কোথাও যায়নি। থেকে যায় হিদু আকনের বাড়ি। হিদু আকন ওই বৃদ্ধ রাবিয়া বেগমকে নানী বলে ডাকতে শুনেছি। পরে তার থাকার জন্য বোথলা বাজার সংলগ্ন একটি ভিটায় তৈরী করে দেয় টিনের ছাপড়া কুড়ে ঘর। হিদু ওই ঘরে নিয়মিত খাবার দেয়া সহ তাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে আসছেন এবং বর্তমানে হিদুর তত্বাবধানেই ওই বৃদ্ধ নারী আশ্রিত আছেন ।
শুক্রবার সকালে বৃদ্ধা রাবেয়া বেগমের কাছে গিয়ে জানা যায়, যিনি নিজের পরিচয় সম্পর্কে পুরোপুরি বলতে পারছেন না। কিভাবে কোথা থেকে ভান্ডারিয়ায় আগমন তার তাও বলতে পারছে না। তিনি স্বজনদের কাছে যেতে চান, চান তাদের ভালবাসা। এ জন্য তিনি প্রায়ই কাঁদেন। তিনি অস্পষ্ট ভাষায় শুধুই বলতে পারে নিজের নাম রাবেয়া, স্বামীর নাম মহারাজ, ৪ মেয়ের নাম মনোয়ারা, রেনু ,রাশিদা, মর্জিনা ও ৩ ছেলের নাম মইনুদ্দিন , আইনউদ্দিন ও বোরহানউদ্দিন এবং বাবার নাম মজিদ, ভাইদের নাম কাদের, মোয়াজ্জম ও সাদেক। তার স্বামী আর ছেলেরা সকলে সাংসারিক কাজবাজ করে এবং তিনি বলেন, বাড়ি ঢাকার কাছারকান্দী এবং স্বামীর বাড়ি রাজশাহী।
মো.হেদায়েতুল ইসলাম আকন (হিদু আকন) বলেন, বৃদ্ধ নানী রাবেয়া বেগম একজন মানষিক ভারসাম্যহীন মানুষ। ভাল ভাবে কিছুই বলতে পারছে না। গত ১০ বছর ধরে বৃদ্ধ রাবেয়া বেগমের স্বজনদের অনেক খুঁজেছি। কিন্তু তাদের খুঁজে আজোও পাইনি। আমি তার জন্য শত কষ্ট করি হয়তো সেটা কিছুই না। এই বয়সে তার স্বজনদের কাছে থাকাটা খুবই জরুরী। আমি তাকে তার স্বজনদের কাছে পৌছে দিতে চাই। এ জন্য অপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।